ঢাকা,শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪

মহেশখালী-বদরখালী চৌয়ারফাঁড়ী নৌ চ্যানেলে ফিশিং বোট তৈরি

নিজস্ব প্রতিবেদক ::
কক্সবাজারের মহেশখালী-বদরখালী -চৌয়ারফাঁড়ী নৌ-চ্যানেলের নদী-তীরবর্তী চোরাই কাঠ দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে পণ্যবাহী নৌকা বা ফিশিং বোট। মহেশখালী উপকূলীয় বন বিভাগের বনাঞ্চল থেকে নদীপথে বোট নির্মাতারা এসব চোরাই কাঠ নিয়ে আসেন বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানাগেছে। উপকূলের নৌ-চ্যানেল জুড়ে অবৈধভাবে ফিশিং ট্রলার তৈরির হিড়িক পড়েছে।

সরকারি বনায়নের গাছ ও কাঠ ব্যবহার করে অবৈধভাবে এসব ফিশিং ট্রলার তৈরি হলেও ‘রহস্যজনক’ কারণে নীরব ভূমিকায় রয়েছে বন বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসন।

দীর্ঘদিন ধরে এই দুই স্পটের উপকূলজুড়ে বন নিধনের কয়েকটি সিন্ডিকেট সরকারি বনাঞ্চল থেকে গর্জনসহ বিভিন্ন প্রকার গাছ কাঠ কেটে এসব অবৈধ ফিশিং বোট তৈরির কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে।

মহেশখালী- চকরিয়ার সংরক্ষিত বনাঞ্চলের গাছ দিয়ে ফিশিং ট্রলার তৈরির কাজ চলমান থাকলেও স্থানীয় বন বিভাগ ও প্রশাসন নীরব রয়েছে। ফলে বন নিধনকারী চক্র বেপরোয়াভাবে অবৈধ ফিশিং ট্রলার তৈরির কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে অচিরেই মহেশখালী ও চকরিয়ার বনাঞ্চল বৃক্ষ শূন্য হয়ে বিরান ভূমিতে পরিণত হবে বলে আশঙ্কা করছেন স্থানীয় পরিবেশবিদরা।

অভিযোগ উঠেছে, মহেশখালী ও চকরিয়ার সুন্দরবন রেঞ্জে কর্মরত কতিপয় অসৎ কর্মচারীকে ম্যানেজ করে অসাধু কাঠ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট দীর্ঘ দিন ধরে ফিশিং ট্রলার তৈরির ব্যবসা চালাচ্ছে। এক একটি ফিশিং ট্রলার তৈরি শেষে ৪০ থেকে ৫০ লাখ টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয়। সারা বছরই এসব নদীর উপকূলীয় এলাকার বিভিন্ন পয়েন্টে নদীর তীরে বন বিভাগের অনুমতি ব্যতীত অবৈধ ফিশিং ট্রলার তৈরির রমরমা বাণিজ্য চললেও তা বন্ধে স্থানীয় বন বিভাগ ও প্রশাসন কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করছেনা।

সরেজমিনে দেখা যায়, মহেশখালী চ্যানেলের মহেশখালী-বদরখালী সেতুর উত্তর পাশে ৮ টি, চকরিয়ার চৌঁয়ার ফাড়ি বাজার সংলগ্ন পয়েন্টে নদীর তীরবর্তী স্থানে ২০টি বড় বড় ফিশিং নৌকা নির্মাণের কাজ চলছে।

নৌকা নির্মাণকাজে নিয়োজিত শ্রমিকেরা জানিয়েছে, বনাঞ্চল থেকে নৌপথে কাঠগুলো আনা হয়েছে। এতে কেউ বাঁধা দেয়নি তাঁদের। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা বলেন, নদী-তীরবর্তী স্থানে যেসব নৌকা তৈরি করা হচ্ছে সব কাঠই বনাঞ্চল থেকে আনা। এতে কাঠচোর চক্রের সঙ্গে বন বিভাগের কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারীর যোগসাজশও রয়েছে।

নবাগত চকরিয়া সুন্দরবন রেঞ্জ কর্মকর্তা রুহুল আমিন চকরিয়া নিউজকে বলেন, ফিশিং নৌকা নির্মাণে বন বিভাগের অনুমতি না থাকলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংরক্ষিত বনাঞ্চলের কাঠ দিয়ে অবৈধভাবে নৌকা তৈরি করা হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

মহেশখালী রেঞ্জ কর্মকর্তা অভিজিত কুমার বড়ুয়া চকরিয়া নিউজকে বলেন, পাহাড়ের গাছ কর্তন করে যারা অবৈধ নৌকা তৈরিতে জড়িত তারা যতই প্রভাবশালী হোক না কেন তাঁদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

Share
Save

পাঠকের মতামত: